ছুটির দিন কিংবা অবসর সময়ে একটু মুক্ত পরিবেশ কিংবা প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চায় সবাই। আর এ প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে এবং শহরের কোলাহল আর একঘেয়েমি জীবনে কিছুটা প্রশান্তি আনার লক্ষ্যে খুলনার অদূরে বটিয়াঘাটায় পশুর নদীর পাড়ে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে নয়নাভিরাম ও অপরূপ সুন্দর ওয়াই সি রিসোর্ট অ্যান্ড পিকনিক কর্নার। যারা কর্মব্যস্ত শহরের গণ্ডি পেরিয়ে প্রকৃতি আর নদীর সান্নিধ্য পেতে চান তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান হতে পারে। পরিপূর্ণ গ্রামীণ আমেজের এ রিসোর্টে পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ভাল সময় কাটানো যায়। পশুর নদীর কোলঘেঁষে সবুজগাছের ছায়ায় ঘেরা ও মাছে পরিপূর্ণ ছয়টি লেকসহ ওয়াই সি রিসোর্ট অ্যান্ড পিকনিক কর্নার অবস্থিত নির্মাণ করা হয়। রিসোর্টটি খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার গঙ্গারামপুর ইউনিয়নের গোপালখালী গ্রামে ৭ একর জমির উপর অবস্থিত। এটি খুলনার জিরোপয়েন্ট থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে। মূলত পারিবারিক ও কর্পোরেট পিকনিকের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। শুধুমাত্র বিনোদনের উদ্দ্যেশ্যে নয় বরং কটেজে অবকাশযাপন কিংবা পরিবারের সাথে বনভোজন করা, লেকে মাছ ধরা প্রভৃতি সুযোগ এখানে রয়েছে। যারা সুন্দরের পুজারি এবং শান্তিপ্রিয় তাদের জন্য এটি একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর জায়গা।

কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে খুলনা বাসযোগে
ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে খুলনায় যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সড়কপথে ঢাকার গুলিস্থান বা সায়েদাবাদ থেকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, গ্রীণ লাইন ট্রাভেলস, সোহাগ পরিবহন, হানিফ, ফাল্গুনি, মতো পরিবহন বাসে সরাসরি পদ্ম সেতুর উপর দিয়ে খুলনা যেতে পারেন। পরিবহনগুলোতে এসি ও নন-এসি বাসের মান ভেদে মাথাপিছু ভাড়া ৬৫০ টাকা – ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। পরিবহন বাসগুলো মোটামুটি ৩.৩০/৪.০০ ঘন্টার মধ্যে খুলনায় পৌঁছায়। এছাড়া কিছু লোকাল বাস যেমন- সেতু ডিলাক্স রয়েছে যেগুলো ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম কিন্তু সময় বেশি লাগে।
ট্রেনে খুলনা যেতে
রেলপথে ঢাকার কমলাপুর থেকে সুন্দরবন বা চিত্রা এক্সপ্রেসে খুলনা যাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ৫০৫-৯৮০ টাকা।
খুলনা থেকে ওয়াইসি রিসোর্ট যেতে
খুলনার গল্লামারি, জিরোপয়েন্ট থেকে বাস, মাইক্রোবাস, ইজিবাইকসহ যে কোন যানবাহনে সড়ক পথে এখানে যাওয়া যায়।
রিসোর্টে যেসব সুবিধা রয়েছে
রিসোর্টটি যেন সবধরনের সুযোগ-সুবিধায় পরিপূর্ণ। অবকাশ যাপনের জন্য যে উপাদানগুলো দরকার সেগুলো প্রতিটি এখানে বিদ্যমান। এসব সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে-
রেস্ট হাউজ, মেন্যু অনুযায়ী খাবার সরবরাহ, ক্যান্টিন, পিকনিক স্পট, নৌকা ভ্রমণ, মিনি শিশু-পার্ক, মিনি চিড়িয়াখানা, রিভার ভিউ, লেকে সাঁতার কাটা ও গোসল করার সুব্যবস্থা, ফুল ও ফলের বাগান, সুবিশাল খেলার মাঠ, ডেকোরেটরের সব মালামাল, আধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, লাইটিং, দক্ষ বাবুর্চি, সার্ভিসের জন্য দক্ষ লোকবল, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ ও পানি, ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা, পানির জার ও তুষকাঠ, পার্কিং সুবিধা। এছাড়া রিসোর্ট রেস্টুরেন্টে লেকের টাটকা মাছ পাবেন। শাকসবজি, গরু, দেশি মুরগি, মাংসও পাবেন এবং পাবেন সবধরনের মৌসুমি ফল।
নানান গাছ-গাছালিতে ঘেরা এ রিসোর্টে আছে শান বাঁধানো পুকুর, লেকে নৌকায় বেড়ানোর ব্যবস্থাসহ অবকাশ যাপনের জন্য কটেজ। বড়রা এতে বেড়িয়ে যেমন মুগ্ধ হন তেমনি ছোটরা মিনি শিশু-পার্কের বিভিন্ন খেলনায় চড়ে বেশ আনন্দ পায়। এছাড়া মিনি চিড়িয়াখানায় বানর, বিদেশি কুকুর, পাখি, কবুতর, তীত পাখি, ঘোড়া দেখে ছোটরা খুব মজা করে। গ্রামের আবহের মধ্যে কৃত্রিম শৈল্পিকতার নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি করা বক, ব্যাঙ, ডায়নোসর, মাছরাঙ্গা পাখি, কুমির দেখে ছোটরা খুব মজা পায়।
ভাড়া ও অন্যান্য খরচ
রাত্রীযাপনের জন্য শ্রেণীভেদে ২,৫০০ টাকা থেকে ৭,০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়ায় আধুনিক রুম রয়েছে। আছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমও। রিসোর্টের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। আছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। লেকে দর্শনার্থীরা নিজে মাছ ধরে বার-বি-কিউ করতে পারবেন। যে কেউ চাইলে লেক থেকে মাছ ধরে বাড়িতে নিয়েও যেতে পারেন।
যোগাযোগ: ০১৭৭৪০৮৮৮৮৮
খুলনার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান
- খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর
- শহিদ হাদিস পার্ক
- খান জাহান আলী সেতু
- বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি
- কবি কৃষ্ণচন্দ্র ইনস্টিটিউট
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্ক (গিলাতলা পার্ক/বনবিলাস)
- জাতিসংঘ শিশু পার্ক
- গল্লামারী লিনিয়ার পার্ক
- শেখ রাসেল ইকোপার্ক
- রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক
- সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক
- শিরোমণি স্মৃতিসৌধ
- ভুতিয়ার পদ্মবিল
- পিঠাভোগ, বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতভিটা
- ধামালিয়া জমিদার বাড়ি
- প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বাড়ি
- কাটকাটা পর্যটন কেন্দ্র
- কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র
- মসজিদকুঁড় মসজিদ
বিশেষ সতর্কতা
হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। একারণে কোন স্থানে ভ্রমণের পূর্বে বর্তমান ভাড়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। ওয়েবসাইটে যোগাযোগের সুবিধার্থে প্রদত্ত নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্য চলো ঘুরি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।