রূপসা সেতু

0
45
Rupsha-brige
Rupsha-bridge

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম সেতু হল খান জাহান আলী সেতু বা রূপসা সেতু। খুলনার রূপসা নদীর উপর নির্মাণ করা হয় এই সেতুটি। রূপসা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সকল জেলা ও মংলা সমুদ্র বন্দরের সাথে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবার কারণে একে খুলনা শহরের প্রবেশ দ্বারও বলা হয়। জাপানি সহায়তায় নির্মিত রূপসা সেতু সকল উৎসব এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে খুলনাবাসীর জন্য চমৎকার এক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। নির্মল বাতাস আর অপরুপ সৌন্দর্যের কারণে সেতুটি খুলনাবাসীর কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। নদী ও বিশুদ্ধ বাতাসকে কেন্দ্র করে  নানা বয়সী মানুষ প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত আড্ডায় মেতে ওঠে এখানে। বাতাসে রূপসা নদীর ঢেউগুলো যখন দুই পাড়ে আছড়ে পড়ে সে দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠা বাতিগুলো মোহনীয় এক পরিবেশ আচ্ছন্ন ফেলে সেতুটিকে। ব্যস্ত শহুরটাকে মোহমীয় আলোকসজ্জা এক সৌন্দর্যপুরতে রূপ দান করে।রূপসা সেতুর দৈর্ঘ্য ১.৬০ কিলোমিটার। ব্রিজে পথচারী ও অযান্ত্রিক যানবাহনের যাতায়াতের জন্য রয়েছে বিশেষ লেনের ব্যবস্থা। এছাড়া মূল সেতুতে উঠার জন্য সেতুর দুই প্রান্তে দুটি করে মোট চারটি সিঁড়ি রয়েছে। সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নদীর পাড়ে সবসময়ই দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। সেতুর দুই পাশে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সবচেয়ে বেশি ফুচকা, চটপটি, ঝালমুড়ি আর চানাচুরের দোকান।

রূপসা সেতু
রূপসা সেতু

কিভাবে যাবেন

১. বাসযোগে ঢাকা থেকে খুলনা

ড়কপথে ঢাকার গুলিস্থান বা সায়েদাবাদ থেকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, গ্রীণ লাইন ট্রাভেলস, সোহাগ পরিবহন, হানিফ, ফাল্গুনি, মতো পরিবহন বাসে সরাসরি পদ্ম সেতুর উপর দিয়ে খুলনা যেতে পারেন। পরিবহনগুলোতে এসি ও নন-এসি বাসের মান ভেদে মাথাপিছু ভাড়া ৬৫০ টাকা – ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। পরিবহন বাসগুলো মোটামুটি ৩.৩০/৪.০০ ঘন্টার মধ্যে খুলনায় পৌঁছায়। এছাড়া কিছু লোকাল বাস যেমন- সেতু ডিলাক্স  রয়েছে যেগুলো ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম কিন্তু সময় বেশি লাগে। যেহেতু সবগুলো বাস খান জাহান আলী সেতুর উপর দিয়ে আসে একারণে কেই ইচ্ছা করলে লবণচোরা বাসস্ট্যান্ডে কিংবা ব্রিজের যেকোন প্রান্তে নামতে পারেন। যদি কেউ খুলনা শহর থেকে সেতু দেখতে চায় তাহলে সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে নেমে ইজিবাইক বা রিকশায় এম এ বারি রাস্তা ধরে সামনে এগিয়ে রূপসা ব্রিজে যাওয়ার আলাদা রাস্তা দিয়ে খানজাহান আলী সেতুতে যেতে পারবেন।

২. ট্রেনযোগে ঢাকা থেকে খুলনা

রেলপথে ঢাকার কমলাপুর থেকে সুন্দরবন বা চিত্রা এক্সপ্রেসে খুলনা যাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ৫০৫-৯৮০ টাকা।

৩. খুলনা থেকে রূপসা সেতু

খুলনার যেকোন স্থান থেকে ইজিবাইক, রিক্সার মাধ্যমে রূপসা সেতু যাওয়া যায়।

কোথায় থাকবেন

খুলনা শহরে বিভিন্ন মানের সরকারী ও বেসরকারি আবাসনের ব্যবস্থা আছে। আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল সিটিইন, টাইগার গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল ক্যাসল সালাম, ওয়েস্টার্ন ইন, উল্লেখযোগ্য। এছাড়া খুলনায় সার্কিট হাউজ, এলজিডি রেস্ট হাউজ, বিআইডব্লিউটিসি রেস্ট হাউজ, খুলনা সিটি কর্পোরেশন রেস্ট হাউজ, মংলা বন্দর রেস্ট হাউজ, সড়ক ও জনপথ রেস্ট হাউজের মতো সরকারী আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।

কোথায় খাবেন

খুলনা শহরে সাধারণ মানের খাবার হোটেল থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের জন্যও আধুনিক মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এসব রেস্টুরেন্টে বাঙ্গালি খাবার, ফাস্ট ফুড আইটেম, চাইনিজসহ সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। শহরের সাতরাস্তা মোড়ের নুর কাচ্চি খেতে পারেন। মাংসের সাথে চুই ঝালের স্বাদ নিতে হলে জিরো পয়েন্ট যেতে পারেন। সেখানে হোটেল কামরুল, আব্বাস, চুকনগর হোটেলসহ বেশ কিছু হোটেল পাবেন। এছাড়া খালিশপুরের মেগার মোড়ের বিরিয়ানি খুবই প্রসিদ্ধ।

খুলনার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান

  • খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর
  • হাদিস পার্ক
  • বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি
  • কবি কৃষ্ণচন্দ্র ইনস্টিটিউট
  • দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স
  • ওআইসি রিসোর্ট
  • খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
  • খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • খুলনা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্ক (গিলাতলা পার্ক/বনবিলাস)
  • গল্লামারী লিনিয়ার পার্ক
  • শেখ রাসেল ইকোপার্ক
  • রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক
  • সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক
  • শিরোমণি স্মৃতিসৌধ
  • ভুতিয়ার পদ্মবিল
  • পিঠাভোগ, বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতভিটা
  • ধামালিয়া জমিদার বাড়ি
  • প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বাড়ি
  • কাটকাটা পর্যটন কেন্দ্র
  • কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র
  • মসজিদকুঁড় মসজিদ

 বিশেষ সতর্কতা

হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। একারণে কোন স্থানে ভ্রমণের পূর্বে বর্তমান ভাড়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। ওয়েবসাইটে যোগাযোগের সুবিধার্থে প্রদত্ত নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্য চলো ঘুরি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here