বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি

0
16
Bir-shrestro-Ruhul-Amin-cemetery

খুলনা জেলার রূপসা নদীর পাড় স্বাধীন বাংলাদেশের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। রূপসা নদীর পূর্বপাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব ও  নিজের জীবন বাজি রেখে দেশের জন্য আত্মত্যাগ তাকে ভূষিত করেছে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সামরিক সর্বোচ্চ খেতাবে। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছাকাছি একটি যুদ্ধ জাহাজে অবস্থানকালীন শত্রুপক্ষের বিমান হামলায় শহীদ হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মৃত্যু আসন্ন জেনে এ বীর সন্তান পালিয়ে যান নি কাপুরুষের মত। এজন্য জাতি আজও গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে এই বীরসেনাকে।  প্রতিবছর রুহুল আমিনের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও সশস্ত্রবাহিনী দিবসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন নানা কর্মসূচির আয়োজনের মাধ্যমে রুহুল আমিনের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন।

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি, খুলনা
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি, খুলনা

১৯৭১ সালে ১০ ডিসেম্বর হলদিয়া নৌঘাঁটি থেকে পাকিস্থানি নৌঘাটি পিএনএস তিতুমির দখলের জন্য মংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে পলাশ, পদ্মা ও পাভেল নামের তিনটি গান বোট রওনা দেয়। কিন্তু গানবোট পলাশ খুলনা শিপ ইয়ার্ডের খুব কাছাকাছি পৌঁছালে জঙ্গি বিমান হতে বোমা ও গুলি বর্ষণ শুরু হয়। পলাশের কমান্ডার সবাইকে গানবোট ত্যাগ করার নির্দেশ দিলেও রুহুল আমিন গান বোটকে সচল রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। হঠাৎ একটি গোলা পলাশের ইঞ্জিন রুমে আঘাত করে এবং তা ধ্বংস হয়ে যায়। বীরশ্রেষ্ট রহুল আমিন আহত অবস্থায় নদী তীরে পৌছালে পাড়ে অবস্থানরত পাকিস্থানি সেনা ও রাজাকাররা তাঁকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা, অসামান্য বীরত্ব ও সর্বোচ্চ আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর মোহাম্মদ রহুল আমিনকে সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে খুলনা যেতে

ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে খুলনায় যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সড়কপথে ঢাকার গুলিস্থান বা সায়েদাবাদ থেকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, গ্রীণ লাইন ট্রাভেলস, সোহাগ পরিবহন, হানিফ, ফাল্গুনি, মতো পরিবহন বাসে সরাসরি পদ্ম সেতুর উপর দিয়ে খুলনা যেতে পারেন। পরিবহনগুলোতে এসি ও নন-এসি বাসের মান ভেদে মাথাপিছু ভাড়া ৬৫০ টাকা – ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। পরিবহন বাসগুলো মোটামুটি ৩.৩০/৪.০০ ঘন্টার মধ্যে খুলনায় পৌঁছায়। এছাড়া কিছু লোকাল বাস যেমন- সেতু ডিলাক্স  রয়েছে যেগুলো ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম কিন্তু সময় বেশি লাগে।

ট্রেনে খুলনা যেতে

রেলপথে ঢাকার কমলাপুর থেকে সুন্দরবন বা চিত্রা এক্সপ্রেসে খুলনা যাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ৫০৫-৯৮০ টাকা।

খুলনা থেকে বীরশ্রেষ্ঠ রুহল আমিনের সমাধি যেতে

খুলনার শিবরাড়ী, রয়্যাল মোড়, সোনাডাঙ্গা, গল্লামারি, নিউ মার্কেট প্রভৃতি এলাকা থেকে ইজিবাইক করে রূপসা ঘাটে পৌঁছাতে হবে। এরপর রূপসা খেয়া পার হয়ে নদীর ওপারে ডানহাতে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি দেখা যাবে।

কোথায় থাকবেন

খুলনা শহরে বিভিন্ন মানের সরকারী ও বেসরকারি আবাসনের ব্যবস্থা আছে। আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল সিটিইন, টাইগার গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল ক্যাসল সালাম, ওয়েস্টার্ন ইন, উল্লেখযোগ্য। এছাড়া খুলনায় সার্কিট হাউজ, এলজিডি রেস্ট হাউজ, বিআইডব্লিউটিসি রেস্ট হাউজ, খুলনা সিটি কর্পোরেশন রেস্ট হাউজ, মংলা বন্দর রেস্ট হাউজ, সড়ক ও জনপথ রেস্ট হাউজের মতো সরকারী আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।

কোথায় খাবেন

খুলনা শহরে সাধারণ মানের খাবার হোটেল থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের জন্যও আধুনিক মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এসব রেস্টুরেন্টে বাঙ্গালি খাবার, ফাস্ট ফুড আইটেম, চাইনিজসহ সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। শহরের সাতরাস্তা মোড়ের নুর কাচ্চি খেতে পারেন। মাংসের সাথে চুই ঝালের স্বাদ নিতে হলে জিরো পয়েন্ট যেতে পারেন। সেখানে হোটেল কামরুল, আব্বাস, চুকনগর হোটেলসহ বেশ কিছু হোটেল পাবেন। এছাড়া খালিশপুরের মেগার মোড়ের বিরিয়ানি খুবই প্রসিদ্ধ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here