করমজল পর্যটন কেন্দ্রটি সুন্দরবনে পশুর নদীর তীরে অবস্থিত। ৩০ হেক্টর জমির উপর কৃত্রিমভাবে নির্মাণ করা হয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্রটি। প্রকৃতির শোভা বাড়াতে এখানে রয়েছে কুমির, হরিণ, রেসাস বানর সহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। এছাড়াও নির্মিত হয়েছে কাঠের ট্রেইল, টাওয়ার এবং জেলেদের মাছ ধরার কর্মজজ্ঞ হচ্ছে অতিরিক্ত প্রাপ্তি। করমজলে বাংলাদেশের একমাত্র কুমিরের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র অবস্থিত।

মংলা থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করমজল পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। পর্যটন কেন্দ্রের প্রথমেই রয়েছে সুন্দরবনের মানচিত্র, যা সুন্দরবন সম্পর্কে মানচিত্র প্রাথমিক ধারণা দেয়। সামনে আঁকাবাঁকা কাঠের তৈরি মাঙ্কি ট্রেইল নামের হাঁটা পথ ধরে এগিয়ে গেলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের সমৃদ্ধতা সম্পর্কে অনুমান করা যায়। এই পথে এগিয়ে পশুর নদীর দেখা পাওয়া যায় চাইলে সেখানে নির্মিত বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নিতে পারেন। সেখান থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণে পথের মাথায় একটি শেইড রয়েছে। এই জায়গা থেকে পশ্চিম দিকে আরো একটি কাঠের নির্মিত ট্রেইল দেখতে পাবেন। এই পথ আপনাকে নিয়ে যাবে কুমির এবং হরিণ প্রজনন কেন্দ্র এবং পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে। এই টাওয়ার থেকে আশেপাশের সৌন্দর্য্য দেখে আপনার মন নিশ্চিত প্রশান্তিতে ভরে যাবে।
টিকেট মূল্য
- বাংলাদেশি ও বিদেশী পর্যটকের জন্য করমজল পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ মূল্য যথাক্রমে ২০ এবং ৩০০ টাকা।
- বাংলাদেশি ছাত্র ও গবেষকরা ২০ ও ৪০ টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করতে পারেন। অবশ্য বিদেশী গবেষকদের করমজলে প্রবেশের জন্য ৫০০ টাকা গুনতে হয়।
- বারো বছরের নিচে যেকেউ করমজলে প্রবেশ করতে ১০ টাকার টিকেট কাটতে হবে। ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশের জন্য এখানে ক্যামেরাপ্রতি অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় বাংলাদেশীদের জন্য এই চার্জ ২০০ টাকা এবং বিদেশি জন্য ৩০০ টাকা।
কীভাবে যাবেন
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে পর্যটক পরিবহন, সাকুরা পরিবহন সোহাগ পরিবহন ইত্যাদি বাসে সহজেই বাগেরহাট আসতে পারবেন। এরপর বাগেরহাটের মংলা বন্দর থেকে করমজল যাবার নৌযান ভাড়া করতে পারবেন। বাসে জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। মংলা ফেরি ঘাট থেকে ১০ জনের উপযোগী ইঞ্জিন চালিত নৌকার ভাড়া করতে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা লাগতে পারে।
কোথায় থাকবেন
যদি সুন্দরবনে রাত কাটাতে চান তবে ট্যুরিস্ট ভেসেলে রাত কাটাতে পারবেন। এছাড়া হিরণপয়েন্টের নীলকমল, টাইগার পয়েন্টের কচিখালী এবং কাটকায় বন বিভাগের রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। নীলকমল ও কচিখালীতে কক্ষ প্রতি ৩০০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। তবে কচিখালীতে ৪ কক্ষ ভাড়া নিলে ১০,০০০ টাকায় থাকতে পারবেন। কটকা রেস্ট হাউজে রুম নিতে লাগে ২০০০ টাকা। বিদেশি ভ্রমণকারীদের এই সব রেস্ট হাউজে রাত কাটাতে রুম প্রতি গুনতে হবে ৫০০০ টাকা।
আর যদি করমজল পর্যটন কেন্দ্র থেকে দিনে ফিরে আসেন তবে মংলায় বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেল পশুর এ ৬০০ থেকে ২০০০ টাকায় থাকতে পারবেন।
এছাড়াও মংলা শহরে সাধারণ মানের হোটেলগুলোতে ২০০ থেকে ৮০০ টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন। অথবা খুলনা চলে এসে সেখান বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল পাবেন থাকার জন্যে।
আরো পড়ুন: তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
বাগেরহাট জেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
- ষাট গম্বুজ মসজিদ
- খান জাহান আলীর মাজার
- চন্দ্রমহল পার্ক
বিশেষ সতর্কতা
হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। একারণে কোন স্থানে ভ্রমণের পূর্বে বর্তমান ভাড়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। ওয়েবসাইটে যোগাযোগের সুবিধার্থে প্রদত্ত নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্য চলো ঘুরি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।