খুলনা ও যশোর জেলার শেষ সীমানায় খুলনার ফুলতলা উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এ গ্রামটি অবস্থিত। ফুল, ফল আর বিচিত্র গাছ গাছালিতে ঠাসা সৌম্য-শান্ত একটি গ্রাম দক্ষিণডিহি। বর্তমানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয় ‘রবীন্দ্র কমপ্লেক্স’ নামে পরিচিত। এখানে রয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কবিপত্নীর আবক্ষ ভাষ্কর্য এবং দ্বিতল ভবন। এছাড়াও ঘন সবুজ বাগান, পান বরজ এবং নার্সারি এই বাড়িটির শোভাবর্ধন করছে। জানা যায় এই দক্ষিণডিহি গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাসারদা সুন্দরী দেবী এবং কাকি ত্রিপুরা সুন্দরী দেবী। যৌবনে বিশ্বকবি বেশ কয়েকবার মায়ের সঙ্গে এই দক্ষিণডিহি গ্রামের মামা বাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন। তাইতো কবির জন্ম এবং মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা আয়োজনে মুখর হয়ে উঠে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয় পরিদর্শনের সময়
রোববার বাদে সপ্তাহের ছয় দিন দর্শনার্থীদের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয় খোলা থাকে। গ্রীষ্মকালে সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা এবং শীতকালে সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা নির্দৃষ্ট ফির বিনিময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয় ঘুরে দেখতে পারেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে খুলনা যেতে
ঢাকা থেকে সড়ক ও রেলপথে খুলনায় যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সড়কপথে ঢাকার গুলিস্থান বা সায়েদাবাদ থেকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, গ্রীণ লাইন ট্রাভেলস, সোহাগ পরিবহন, হানিফ, ফাল্গুনি, মতো পরিবহন বাসে সরাসরি পদ্ম সেতুর উপর দিয়ে খুলনা যেতে পারেন। পরিবহনগুলোতে এসি ও নন-এসি বাসের মান ভেদে মাথাপিছু ভাড়া ৬৫০ টাকা – ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। পরিবহন বাসগুলো মোটামুটি ৩.৩০/৪.০০ ঘন্টার মধ্যে খুলনায় পৌঁছায়। এছাড়া কিছু লোকাল বাস যেমন- সেতু ডিলাক্স রয়েছে যেগুলো ভাড়া অপেক্ষাকৃত কম কিন্তু সময় বেশি লাগে।
ট্রেনে খুলনা যেতে
রেলপথে ঢাকার কমলাপুর থেকে সুন্দরবন বা চিত্রা এক্সপ্রেসে খুলনা যাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে ৫০৫-৯৮০ টাকা।
খুলনা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরালয় যেতে
খুলনার শিবরাড়ী, রূপসা ঘাট, রয়্যাল মোড় থেকে সিএনজি দিয়ে সহজেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি অর্থাৎ ফুলতলা পর্যন্ত যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ভাড়া মাথাপিছু স্থানভেদে ৪০-৭০ টাকা।
কোথায় থাকবেন
খুলনা শহরে বিভিন্ন মানের সরকারী ও বেসরকারি আবাসনের ব্যবস্থা আছে। আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল সিটিইন, টাইগার গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল ক্যাসল সালাম, ওয়েস্টার্ন ইন, উল্লেখযোগ্য। এছাড়া খুলনায় সার্কিট হাউজ, এলজিডি রেস্ট হাউজ, বিআইডব্লিউটিসি রেস্ট হাউজ, খুলনা সিটি কর্পোরেশন রেস্ট হাউজ, মংলা বন্দর রেস্ট হাউজ, সড়ক ও জনপথ রেস্ট হাউজের মতো সরকারী আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে।
কোথায় খাবেন
খুলনা শহরে সাধারণ মানের খাবার হোটেল থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের জন্যও আধুনিক মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এসব রেস্টুরেন্টে বাঙ্গালি খাবার, ফাস্ট ফুড আইটেম, চাইনিজসহ সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। শহরের সাতরাস্তা মোড়ের নুর কাচ্চি খেতে পারেন। মাংসের সাথে চুই ঝালের স্বাদ নিতে হলে জিরো পয়েন্ট যেতে পারেন। সেখানে হোটেল কামরুল, আব্বাস, চুকনগর হোটেলসহ বেশ কিছু হোটেল পাবেন। এছাড়া খালিশপুরের মেগার মোড়ের বিরিয়ানি খুবই প্রসিদ্ধ।
খুলনার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান
- খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর
- শহিদ হাদিস পার্ক
- খান জাহান আলী সেতু/রূপসা সেতু
- বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি
- কবি কৃষ্ণচন্দ্র ইনস্টিটিউট
- ওআইসি রিসোর্ট
- খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- খুলনা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পার্ক (গিলাতলা পার্ক/বনবিলাস)
- জাতিসংঘ শিশু পার্ক
- গল্লামারী লিনিয়ার পার্ক
- শেখ রাসেল ইকোপার্ক
- রানা রিসোর্ট অ্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক
- সোনাডাঙ্গা সোলার পার্ক
- শিরোমণি স্মৃতিসৌধ
- ভুতিয়ার পদ্মবিল
- পিঠাভোগ, বরীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বসতভিটা
- ধামালিয়া জমিদার বাড়ি
- প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের বাড়ি
- কাটকাটা পর্যটন কেন্দ্র
- কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র
- মসজিদকুঁড় মসজিদ
বিশেষ সতর্কতা
হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। একারণে কোন স্থানে ভ্রমণের পূর্বে বর্তমান ভাড়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। ওয়েবসাইটে যোগাযোগের সুবিধার্থে প্রদত্ত নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্য চলো ঘুরি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।