পশ্চিম সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার মুন্সিগঞ্জে গড়ে ওঠা এ ‘মিনি পার্ক’ আতিথেয়তা দিয়ে দেশী বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। ভ্রমন পিপাসুদের জন্য যাবতীয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বজায় রেখে প্রায় সতের একর জমিতে গড়ে ‘ট্যুরিজম সেন্টারটি’ তোলা হয়েছে এই ইকোপার্কটি।

পশ্চিম সুন্দরবনকে লোকালয় থেকে বিভক্ত করা মালঞ্চ নদীর চরে গড়ে ওঠা ‘আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজম’ নামীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মন্ডিত আধুনিকতায় ছোঁয়ায় ভরপুর এ ‘ট্যুরিজম সেন্টার’। কলবাড়ী বিজ্র সংলগ্ন “আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজম” সেন্টারের দু’পাশ ও মধ্যভাগ দিয়ে এমন তিনটি ট্রেইল সরাসরি মালঞ্চ নদীতে যেয়ে মিশেছে। চারিদিকে লবন পানির সমারোহ সত্ত্বেও নদীর চরে গড়ে ওঠা ঐ ‘ট্যুরিজম সেন্টারে’র মধ্যভাগে মিষ্টি পানির উৎস হিসেবে পুকুর খনন করা হয়েছে। কেওড়াসহ সুন্দরবনের নানা উদ্ভিদে ভরপুর এ পার্কে অতিথিদের জন্য ‘কটেজ’ সুবিধার পাশাপাশি আধুনিক মানের রেষ্টুরেন্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। নীচে লবন পানিতে ঢেকে থাকা চরের উপর নিরাপদ দুরত্বে বাঁশের তৈরী মাঁচা নির্মান করে সেখানে পর্যটকদের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। “আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজম” সেন্টার থেকে বিকালে সুর্যাস্ত দৃশ্য অবলোকন করলে নিজেকে সুন্দরবনের গভীরে আবিস্কার করবে পর্যটকরা। সুন্দরবনের কোলের মধ্যে গড়ে তোলা ‘ট্যুরিজম সেন্টার’ এ প্রবেশ করলেই সুন্দরবনের ছোঁয়া উপলব্ধি করা যাবে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি কৃত্রিমভাবে উপায়ে সংরক্ষিত সুন্দরবনের সকল প্রজাতির মাছের সাথে পর্যটকদের পরিচয় ঘটাবে ‘ফিশিং মিউজিয়াম’। এছাড়া ‘ট্যুরিজম সেন্টার’র ‘ওয়াচ টাওয়ার’ থেকে সুন্দরবনের ভিতরকার পরিবেশ অবলোকন করার সুযোগও আছে।
আরো পড়ুন: করমজল পর্যটন কেন্দ্র
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি সাতক্ষীরা শহর বা শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের বাস আছে। ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা আসতে ৫-৬ ঘণ্টা সময় লাগে। গাবতলী, সায়েদাবাদ থেকে সোহাগ পরিবহণ, সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস, ঈগল পরিবহণ, একে ট্রাভেলস, মামুন পরিবহণসহ আরও কয়েকটি বাস সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এ ছাড়া আকাশপথে আসতে চাইলে যশোর বিমানবন্দরে নেমে বাসযোগে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড যেতে হবে। সেখান থেকে বুড়িগোয়ালিনির নীলডুমুর ফরেস্ট অফিস থেকে পাস গ্রহণ করে ইঞ্জিনচালিত নৌকা অথবা লঞ্চ যোগে সুন্দরবনে ভ্রমণের সুযোগ থাকছে।
কোথায় থাকবেন
সাতক্ষীরা শহরে অনেক ভালোমানের রিসোর্ট আছে। তবে মুন্সিগঞ্জে থাকার জায়গা দুটি সুশীলনের টাইগার পয়েন্ট ও বরসা রিসোর্ট। সড়কপথে সুন্দরবন দেখতে হলে মুন্সিগঞ্জে আসতে হবে। মুন্সিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড নেমে ডান দিকের রাস্তা দিয়ে ৩-৪ মিনিট হাঁটলে মালঞ্চ নদীর তীর ঘেঁষে চোখে পড়বে সুশীলনের টাইগার পয়েন্ট এবং বাসস্ট্যান্ড থেকে বামপাশের রাস্তা দিয়ে কিছু দূর হেঁটে চুনা নদীর ব্রিজ পার হলে নদীর তীর ঘেঁষে বরসা রিসোর্টের দেখা মিলবে। টাইগার পয়েন্টে রুমপ্রতি ভাড়া ১১৫০ টাকা থেকে শুরু। তবে বেড নিলে প্রতি বেডের ভাড়া পড়বে ৩০০ টাকা, এক রুমে ৪টি বেড। বরসাতে রুমপ্রতি ভাড়া ১২০০ থেকে শুরু, এখানে বেড ভাড়া নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে এ রিসোর্টটি একদম সুন্দরবনের ভিতরে।
সাতক্ষীরা জেলার উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান
- কলাগাছিয়া ইকোপার্ক
- তেতুলিয়া জামে মসজিদ
- গাবুরা দ্বীপ
বিশেষ সতর্কতা
হোটেল, রিসোর্ট, যানবাহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ সময়ের সাথে পরিবর্তন হয় তাই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বর্তমানের সাথে মিল না থাকতে পারে। একারণে কোন স্থানে ভ্রমণের পূর্বে বর্তমান ভাড়া ও খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন। ওয়েবসাইটে যোগাযোগের সুবিধার্থে প্রদত্ত নাম্বারে কোনরূপ আর্থিক লেনদেনের আগে যাচাই করার অনুরোধ করা হলো। কোন আর্থিক ক্ষতি বা কোন প্রকার সমস্যা হলে তার জন্য চলো ঘুরি কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।