সিলেট বাংলাদেশের একটি জেলা ও শহর। এটি বাংলাদেশের নক্ষত্র নগরী হিসাবে পরিচিত। সিলেট বাংলাদেশের পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এবং সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত। সিলেট জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র ও সর্বাধিক জনসংখ্যায় শহর। সিলেট শহরে অনেকগুলো প্রাচীন মন্দির এবং মসজিদ রয়েছে, যেমন শ্রীবিহার পুজা মন্দির, শাহ পরান মসজিদ, বিশ্বনাথ মন্দির ইত্যাদি। সিলেটের বিখ্যাত দরগাহ হলো জাফলং শাহী দরগাহ, যেটি ইসলামিক সুফি শাহ্জালাল উদ্দিন জাফরানী (রঃ) এর মাজার স্থল। সিলেটে আরও অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে, যেমন রতনপুর হাইল, লাউঁগছড়ি ঝর্ণা, বিছানাকান্দি নদী, সুপারাবাজার মার্কেট ইত্যাদি। সিলেটের পর্যটকদের জন্য মাদবকুন্ড ঝর্ণা, লালাখাল জলপ্রপাত, কাজিরাঙ্গা নদী সহ অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে।
সিলেটের অতীত এবং ঐতিহ্যগত মানচিত্রে অনেকগুলো প্রাচীন মন্দির, পার্ক এবং ঐতিহ্যগত স্থান রয়েছে, যেমন সুন্দরবন নদী পার্ক, কাজিরাঙ্গা মন্দির, গৌরগৌরি মন্দির, শাহপরান মসজিদ, পূর্বাচলের সম্পর্কে তথ্য প্রদান করার জন্য সিলেট জিলা পরিষদের ঐতিহ্যগত প্রদর্শনীগুলো বর্ণনা করতে পারেন।
রাতারগুল
রাতারগুল বাংলাদেশের সিলেট জেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক আকর্ষণ। এটি বিশ্বব্যাংকের গবেষণায় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাথরচাপ ঝর্ণা হিসাবে পরিচিত। এটি রাতারগুল নদী থেকে নির্গমিত হয় এবং গালচীন উপত্যকায় পড়ে। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য প্রশংসিত এবং পর্যটন করার জন্য খুবই জনপ্রিয়।
রাতারগুল ঝর্ণাটির উচ্চতা প্রায় ২০০ ফুট এবং পতাকাটি প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতায় পড়ে নদীর জলে। এটি বিভিন্ন মানব স্থাপত্য রচনার মতো কাজ করে এবং পানিতে সৌন্দর্য ও চমৎকার শব্দ সৃষ্টি করে। আপনি এখানে সুন্দর পরিবেশে বেসে ঘুরতে পারেন এবং উপভোগ করতে পারেন এই অদ্ভুত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের। এছাড়াও রাতারগুল অঞ্চলে বাংলাদেশের বাহুল্য বন্যা ও প্রাণিসম্পদের জন্য পরিচিত। আপনি এখানে বায়ুয়ে চড়া করতে পারেন এবং মনোরম পথ থেকে উদ্যানের সুন্দর দৃশ্য দেখতে পারেন।
লাউঁগছড়ি ঝর্ণা
লাউঁগছড়ি ঝর্ণা সিলেট জেলায় অবস্থিত একটি প্রশিদ্ধ পর্যটন স্থল। এটি বিছানাকান্দি নদীর পাশে অবস্থিত একটি সুন্দর ঝর্ণা। ঝর্ণাটি চীনের ম্যাচাও প্রান্তের লাউঁগছড়ি পাহাড় থেকে নির্গমিত হয়। লাউঁগছড়ি ঝর্ণা বিশাল পাহাড়ের শিখর থেকে জল পতাকায় পড়ে এসে নদীর পাথরের মাধ্যমে ঝর্ণার রূপ গ্রহণ করে।
লাউঁগছড়ি ঝর্ণা একটি নির্মিত ঝর্ণা নয়, বরং এটি একটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা যা প্রাকৃতিক উপাদানের কাছ থেকে পানি নিয়ে তৈরি হয়েছে। এই ঝর্ণাটির উচ্চতা প্রায় ৩৮০ ফুট এবং পতাকাটি প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতায় পড়ে নদীর জলে। লাউঁগছড়ি ঝর্ণা দেখতে অত্যন্ত সুন্দর এবং পর্যটন প্রাণীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। প্রতিবছর অনেক পর্যটক এখানে আগমন করে লাউঁগছড়ি ঝর্ণা দেখতে এবং এর সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করতে।
জাফলং শাহী দরগাহ
জাফলং শাহী দরগাহ বাংলাদেশের সিলেট জেলায় অবস্থিত একটি ধর্মীয় স্থাপনা। এটি বসবাসস্থল হিসাবে পরিচিত এবং বাংলাদেশের ইসলামিক ঐতিহ্যকে প্রতীক্ষা করে।
জাফলং শাহী দরগাহটি বিশ্বব্যাপীয় ইসলামিক সুফি শাহ্জালাল উদ্দিন জাফরানী (রঃ) এর মাজার স্থল। এটি মুক্তিযুদ্ধের মার্কিন সামরিক দলের আক্রমণের পরে স্থাপিত হয়েছে। দরগাহে রয়েছে তিনটি প্রধান মাজার যা পূর্বের শাহীদ মাজার, নতুন শাহীদ মাজার এবং মুক্তিযোদ্ধা মাজার নামে পরিচিত।
জাফলং শাহী দরগাহে প্রতিবছর বাংলাদেশের বড় ইসলামিক উৎসব মিলাদুন্নবী উদযাপন করা হয়। এই উৎসবে হাজার হাজার মুসলিম আগমন করে জাফলং শাহী দরগাহে হজরত শাহ্জালাল উদ্দিন জাফরানী (রঃ) এর প্রতিষ্ঠান দিন উদযাপন করেন।
জাফলং শাহী দরগাহে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামিক দাওয়াহ, জিকির ও মিলাদ মাহফিল সংগ্রহস্থল সংঘটিত হয়। এছাড়াও দরগাহে রয়েছে অনেক মুসলিম পীর ও আল্লাহর আয়াত পাঠকেন্দ্র। এটি বাংলাদেশে মুসলিম শ্রদ্ধালুদের জন্য একটি প্রধান ধর্মীয় গম্বুজ।
শ্রীমঙ্গল জাতীয় উদ্যান
শ্রীমঙ্গল জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে সিলেট জেলায় অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। এটি বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় উদ্যান হিসাবে গণ্য হয়। শ্রীমঙ্গল জাতীয় উদ্যানে বিশাল জলপ্রপাত, ঘন বনসমূহ, বিভিন্ন প্রাণী ও পাখির জন্য পরিচিত। এখানে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বনজীবী সম্পদ রয়েছে। উদ্যানটির মূল লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক বাস্তবতার সংরক্ষণ ও প্রচার।
শ্রীমঙ্গল জাতীয় উদ্যানে অনেক প্রাণী জাতির উপস্থিতি রয়েছে, যেমন বাংলা টাইগার, মালয়ান গরু, সমুদ্র গরু, বাংলা লিয়ন, রেড বার্ড ও অন্যান্য প্রাণী। এছাড়াও এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও প্রজাতির বৃক্ষগুলো দেখতে পাওয়া যায়। উদ্যানে একটি বিদ্যুত ঝর্ণা এবং পিকনিক স্পটগুলোও রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল জাতীয় উদ্যানে পর্যটন করার জন্য আপনাকে আগেই অনুমতি নিতে হবে এবং গাইডের সঙ্গে ভ্রমণ করতে হবে। এছাড়াও ক্যাম্পিং এবং ট্রেকিং অপশনগুলো আছে যা আপনাকে আরো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহায্য করবে।