দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যে ঘেরা উপজেলা হলো লোহাগাড়া। এই উপজেলার দক্ষিণে চকরিয়া, উত্তরে সাতকানিয়া, পশ্চিমে বাঁশখালী, এবং পূর্বে পার্বত্যাঞ্চলের বান্দরবান অবস্থিত। ১৯৮৩ সালে, সাতকানিয়া থানাকে দুভাগে বিভক্ত করে লোহাগাড়া থানা গঠন করা হয়। এই উপজেলার আয়তন ২৫৯.১৯ কিলোমিটার, এবং এখানে প্রায় ২.৫০ লক্ষ মানুষের বসতি প্রতিষ্ঠিত আছে। লোহাগাড়া উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে এবং এই উপজেলার নাম নিয়ে একটি জনশ্রতি রয়েছে। উপজেলার লোহাগাড়া দিঘীর পাড়ে শায়েস্তা খার কিছু সংখ্যক সৈন্য এখানে রাত্রি যাপনের জন্যে অবস্থান নেয়। এই সৈন্যদের নিরাপত্তার জন্যে দিঘীর পাড়ের চারপাশে কামান বসিয়ে রাখা হয়। এই কারণে লোকজন লোহাগাড়া হিসেবে এই স্থানের পরিচিতি দেয়।
শিক্ষা-দীক্ষা, সভ্যতা-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রীড়া-বিনোদনে লোহাগাড়া উপজেলা সমৃদ্ধ। এখানে নানা ধর্ম, বর্ণ ও পেশার মানুষের বসবাস দেখা যায়। লোহাগাড়া উপজেলায় মোট ৯টি ইউনিয়ন আছে; এগুলো হচ্ছেঃ
1. আধুনগর ,
2. লোহাগাড়া
3. আমিরাবাদ ,
4. কলাউজান ,
5. পদুয়া ,
6. চুনতী ,
7. চরম্বা ,
8. পুটিবিলা ,
9. বড়হাতিয়া
লোহাগাড়া উপজেলার দর্শনীয় স্থান
চুনতি অভয়ারন্য
চুনতি, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম
চুনতি অভয়ারণ্য বাংলাদেশের একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হলো। এটি চুনতি অভয়ারণ্য নামেও পরিচিত। এই অভয়ারণ্যটি চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এর আয়তন ৭,৭৬৪ হেক্টর। এই বনের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বিপন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য ১৯৮৬ সালে এই অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বন্য এশীয় হাতির যাতায়াতের একটি সংযোগপথ বা করিডোর হিসেবে এই অভয়ারণ্যের গুরুত্ব অত্যধিক। এই বনের ব্যবস্থাপনা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততায় এখানে সহব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই অভয়ারণ্যে বিশালাকায় শতবর্ষী মাদার গর্জন গাছের জন্য সুপরিচিত যা এই বনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। তবে, ক্রমাবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ, নির্বিচারে গাছ কাটা, কৃষি জমিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বন্যপ্রানীর আবাসস্থান ধ্বংস প্রভৃতি কারণে এ বনের অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন।
চুনতি অভয়ারণ্য একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যশালা। এটি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে অবস্থিত। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে এই অভয়ারণ্যটি নানা প্রজাতির প্রাণীর আবাস স্থান। কক্সবাজারে যাওয়া সময় গাড়ি থামিয়ে এই প্রাকৃতিক অভয়ারণ্যের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। হাতির দেখা এখানে সহসা মিলে না, তবে এই সুন্দর প্রাকৃতিক অভয়ারণ্যে গভীর অরন্যে পর্যটন টাওয়ার রয়েছে, যার মাধ্যমে এই অভয়ারণ্যের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
টংকাবতী খালের রাবার ড্যাম
খালের দুই ধারে বসে খেপলা জালে গ্রামীণ লোকের মাছ ধরার আপরুপ দৃশ আপনাকে বিমোহিত করবে। দুপাসে সবুজ মাঠের মাঝ দিয়ে বোয়ে গেছে পানি, বাধায় করা পাড়ে বসে নির্মল বাতাস আপনি খুব কম জাইগায় পাবেন।
কিভাবে যাবেন-
প্রথমে আমিরাবাদ যাবেন সেখান থেকে-সুখছড়ি তারপর উত্তরকলাউজান সড়ক ধরে টংকাবতী খালের রাবার ড্যাম
নাসিম পার্ক
নাসিম পার্কের অবস্থান আমিরাবাদ হতে ৫ কিমি:পূবে ।
বুলবুল চৌধুরীর বাড়ি
বুলবুল ললিত কলা একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা বুলবুল চৌধুরীর বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নে অবস্থিত। এই পৈত্রিক নিবাস এখনও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহন করছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রোড থেকে এটি ১ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এবং কক্সবাজার যাওয়ার সময় খুব সহজে এই বাড়ির সান্নিধ্যে পৌঁছা যায়।
কিভাবে যাওয়া যায়
চুনতি ইউনিয়ন পরিষদ, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম